সর্দি কাশিতে দারুণ উপকারী মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
সর্দি কাশিতে দারুণ উপকারী মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে জানতে পারবেন৷ যারা এই প্রবলেমে দীর্ঘদিন ভুগছেন, তাদেরকে এই আর্টিকেলে স্বাগতম৷ আজ আপনাদেরকে নিয়েই এ আয়োজন৷ তাই এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো৷
সর্দি কাশি সারাতে মধু ও তুলসী পাতার ব্যবহার কে না জানে? আমরা সকলেই এ বিষয়ে অবগত৷ তাই আজকের আর্টিকেলটি এ সমস্ত রোগীদের নিয়েই লেখা হয়েছে৷ তাহলে চলুন, কথা না বাড়িয়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক৷
ভূমিকা
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কমবেশি অনেকের খুসখুসে কাশি ও সর্দি হয়ে থাকে৷ শীতকালে সর্দি কাশি হওয়াটা কমন বিষয়৷ তবে ঘরোয়া ভাবে কিছু টেকনিক অবলম্বন করে আমরা সর্দি কাশি নিরাময় করতে পারি৷ সর্দি কাশি হলে ঔষধ এবং সিরাপের চেয়ে বেশি কাজ করে মধু ও তুলসী পাতা৷
আরো পড়ুনঃ যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে মধু এবং কালিজিরার উপকারিতা
আপনি কি জানেন মধু এবং তুলসী পাতার উপকারিতা? এগুলো মানব দেহের জন্য অনেক উপকারে আসে৷ ইতিমধ্যে অনেক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তা প্রমাণ করেছেন৷ এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো-
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
এক চা চামচ তুলসী পাতার রস এবং হাফ চা চামচ মধুর সাথে মিক্স করে, হালকা কুসুম কুসুম গরম করে, সেবন করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়৷ এবং এর সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে৷
আরো পড়ুনঃ পুরুষাঙ্গ ছোট হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
অথবা, অল্প পানিতে কয়েকটি তুলসী পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন৷ ফোটানো শেষ হয়ে গেলে হালকা গরম থাকতে তার মধ্যে কিছু মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিয়মিত সেবনে, শুকনো ফাপা কাশি, সর্দি থেকে উপশম পাবেন৷ এটা কিছুদিন সেবনে মুখের রুচি ও হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে৷
পানিতে অল্প কয়েকটি তুলসী পাতা, খোসা ছাড়ানো আধা এবং কিছু চা-পাতি দিয়ে ভালোভাবে পানি ফুটিয়ে নিন৷ পানি যখন কমে আসবে তখন চুলা থেকে নামিয়ে ছেঁকে নিন৷ তারপর কুসুম কুসুম গরম থাকতে তার মধ্যে একটু মধু ও লেবুর রস দিয়ে নিয়মিত কয়েকদিন সেবন করলে, সর্দি কাশি থেকে উপশম পাওয়া যায়৷
শিশুদের সর্দি কাশি হলে
কয়েকটি তুলসী পাতা মিহি করে বেটে নিন৷ তার মধ্যে কয়েক ফোটা লেবুর রস দিন৷ তারপর পরিমাণ মতো মধু মিক্স করুন৷ এগুলো শিশু বাচ্চাকে সকালে এবং রাত্রে পরিমাণ মতো খাওয়ালে সর্দি কাশি নিরাময় হয়৷ প্রাপ্তবয়স্করাও এটা ট্রাই করতে পারেন৷
তবে লক্ষ্যনীয় বিষয়, ছয় মাসের শিশু বাচ্চাকে মায়ের দুধ ব্যতীত, অন্য কিছু খাওয়াবেন না৷ এতে বাচ্চার হজমের প্রবলেম হতে পারে৷ এরকম বাচ্চার সর্দি কাশি হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন৷
গরম পানিতে মধু মিক্স
যদি ঠান্ডা লাগার প্রবলেম থেকে দ্রুত উপশম পেতে চান৷ তাহলে এই কাজগুলো ট্রাই করতে পারেন৷ এক গ্লাস পরিমাণ পানি ফুটিয়ে নিন৷ পানি হালকা গরম থাকতে স্বাদ অনুযায়ী মধু মিক্স করে, প্রতিদিন সেবন করলে ঠান্ডার মতো জটিল সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে৷
মধু ও আদার কার্যকারিতা
সর্দি কাশিতে মধু ও আদার কার্যকারিতা অপরিসীম৷ প্রথমে কিছুটা আদা থেতলিয়ে নিন৷ পরিমাণ মতো পানিতে থেতলানো আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিন৷ পানি কমে আসলে হালকা গরম থাকা অবস্থায়, স্বাদ অনুযায়ী মধু দিয়ে প্রতিদিন সেবন করুন৷ এতে আপনার প্রবলেম সলভ হয়ে যাবে৷
খুসখুসে কাশিতে আদা চায়ের কথা কে না জানে! প্রথমে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি নিন৷ তার মধ্যে চা পাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে নিন৷ হালকা গরম থাকা অবস্থায় তার মধ্যে আদা কুচি করে দিন৷ যদি ডায়বেটিক্স প্রবলেম থাকে, তাহলে চিনির পরিবর্তে স্বাদ অনুযায়ী মধু ব্যবহার করতে পারেন৷ এইভাবে বেশ কয়েকদিন পান করলে সর্দি কাশি ভালো হবে ইনশাআল্লাহ৷
সর্দি-কাশি নিরাময়ে সরিষার তেল, রসুন ও কালিজিরার গুনাগুন
পরিষ্কার একটি পাত্রে ২ চা চামচ সরিষার তেল, রসুন, (থেতলিয়ে নিন) কালিজিরা, (হাতের তালুতে ডোলা দিন) এইসব উপকরণ তেলের মধ্যে দিয়ে দেড় থেকে দুই মিনিট ফুটিয়ে নিন৷ হালকা গরম (যতটুকু সহ্য হয়) এরপর ওই তেলের মধ্যে দুই আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিন৷ আর আস্তে আস্তে উপরের দিকে টানতে থাকুন৷
এরপর কন্ঠনালীতে, বুকে, দুই হাতের তালুতে, দুই পায়ের তালুতে দিয়ে আস্তে আস্তে মাসাস করুন৷ এইভাবে ২/৩ দিন করলে সর্দি পেকে বের হয়ে যাবে৷ এবং রোগীর অনেক প্রশান্তি মিলবে৷ এইভাবে আপনি আপনার সোনামণির ঘরোয়া চিকিৎসা দিতে পারবেন৷ আমরা অনেকেই এই ঘরোয়া টিপস জানিই না৷
সর্দি কাশিতে মধু, তুলসী পাতা, আদা ও লেবুর রসের উপকারিতা
ঋতু পরিবর্তনের সময় কমবেশি সকলেরই সর্দি কাশি এবং গলা ব্যথা হয়৷ এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে হাফ চা চামচ করে আদার রস, লেবুর রস এবং তুলসী পাতার রস দিয়ে স্বাদ অনুযায়ী মধু মিক্স করে, নিয়মিত দুই/ তিন দিন সেবন করলে সর্দি কাশি এবং গলা ব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে৷
এরপর ২৫০ গ্রাম পানিতে তুলসীর পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন৷ ফুটোনো শেষে পানি হালকা ঠান্ডা করে নিয়ে, তার ভেতর মধু ও লেবুর রস দিয়ে সেবন করুন৷ তাহলে সহজে সর্দি কাশি ও গলা ব্যথা দূর হয়ে যাবে৷
সর্দি-কাশিতে হলুদের কার্যকারিতা
হলুদে থাকা এন্ট্রি ইনফ্লোমেটরি যা বুকে জমে থাকা কফ বের করতে সহায়তা করে৷ এক গ্লাস হালকা গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদের গুড়া এবং এক চা চামচ মধুতে মিক্স করে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করলে সর্দি কাশি থেকে উপশম হয়৷
তুলসী পাতার গুনাগুন
অনেক দেশে তুলসী পাতাকে মানসিক চাপ মুক্ত রাখার ঔষধ হিসেবে গণ্য করা হয় তুলসী পাতাতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অক্সিডেন্ট যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং এইসব উপাদান গুলো মানব দেহের নার্ভকে শান্ত রাখে৷ যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে৷
লেখকের মন্তব্য
পরিশেষে বলা যেতে পারে, মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনার চেষ্টা করলাম৷ এরমধ্যে কোন বিষয় বাদ এবং ভুল পরিলক্ষিত হলে আপনার সুন্দর কমেন্টে আমাদেরকে জানিয়ে দিন৷ আমরা সেই ভুল সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ৷
ফিউচার লাইফ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url