স্বামী-স্ত্রীর জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম

স্বামী-স্ত্রীর জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে, আমরা জানতে পারবো৷ যারা এই বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্ন আর্টিকেল খোঁজাখুঁজি করেছেন৷ কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি৷ আজ আমরা এ বিষয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করব।

স্বামী-স্ত্রীর জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম

স্বামী স্ত্রী কিভাবে কাতারে দাঁড়াবে সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করব৷ আজ এই আর্টিকেলটি পাঠকের জন্য স্পেশাল হতে চলেছে৷ তাই সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো যাই হোক আর কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ভূমিকা

সাধারণত পুরুষরা জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে থাকে। ফরজ নামাজ ছাড়া তো আর কোন নামাজে জামাত নাই। জামাতের ফজিলত লাভের নিমিত্তে স্বামীর জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে। এতে অনেক সওয়াব পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুনঃ সালাতুল হাজতের নামাজ

হয়তো কোন কারণে পুরুষরা জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারলো না। তখন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই বাড়িতে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে। শুধু স্ত্রী কেন পরিবারের অন্য সব সদস্য ছেলে-মেয়ে নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে।

স্বামী স্ত্রী কিভাবে কাতারে দাঁড়াবে

শুধুমাত্র ফরজ নামাজ ব্যতীত অন্য যেকোনো নামাজ একসঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে  আদায় করতে পারবে। কিন্তু ফরজ নামাজের বেলায় এটি ব্যতিক্রম। ফরজ নামাজ পড়ার সময় স্বামীর এক কাতার পেছনে স্ত্রী দাঁড়াবে। কিন্তু পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একসঙ্গে নামাজ আদায় করা যাবে না। হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে-

হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঘরে জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছি। উম্মে সুলাইম আমাদের সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করা শুরু করে দেন। সহীহ বোখারী)

উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাহারম ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে তার ডান পাশে দাঁড় করাতেন৷ এবং মহিলারা তার পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতেন।

কিন্তু বাড়িতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদের জামাত ছাড়া যাবে না। নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হবে। কারণ মসজিদের জামাতের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই কোন কারণবশত মসজিদের জামাতকে অবহেলা করা যাবে না। কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন- যদি কোন ব্যক্তি মোয়াজ্জিনের আযান শোনার পরেও ওযর ব্যতীত মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে একাকী নামাজ আদায় করে তাহলে তার সালাত অগ্রাহ্য হবে না। পরিপূর্ণ নামাজ বলে গণ্য করা হবে না। লোকেরা বললেন, "ওযর কি?  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ওজর হলো ভয়ভীতি। (আবু দাউদ শরীর)

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কে ইমামতি করবে

স্বামী স্ত্রী এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে না।  বাড়িতে স্বামী স্ত্রী জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হলে সেই ক্ষেত্রে স্বামী ইমামতি করবে৷ কিন্তু স্ত্রী ইমামতি করতে পারবে না। কোন কারণবশত পুরুষরা যদি মসজিদে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়তে না পারে৷ তাহলে তারা বাড়িতে স্ত্রী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে জামাত বদ্ধভাবে নামাজ আদায় করতে পারবে।

সেই ক্ষেত্রে স্বামী ইমামতি করবে। কোন নাবালেগ ছেলে সন্তান যদি থাকে তাহলে সে ইমামের ডান পাশে দাঁড়াবে। এবং স্ত্রীরা স্বামীর পেছনের কাতারে দাঁড়াবে।

স্বামী স্ত্রীর জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য কে ইকামত দেবে

জামাতে নামাজ আদায় করতে হলে ইকামত দিতে হয়। ইকামত ছাড়া ফরজ নামাজ আদায় করা যায় না। স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হলে স্বামীকে ইকামত দিতে হবে। স্ত্রী ইকামত দিতে পারবে না। সেখানে যদি কোন পুরুষ ব্যক্তি থাকে তাহলে সে ইকামত দিতে পারবে।

হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে,"মহিলাদের জন্য আযান দেওয়া এবং ইকামত দেওয়া যাবে না"। কারণ মহিলাদের জন্য আজান ও ইকামত দয়া জায়েজ নেই। হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত,"তিনি বলেন মহিলাদের জন্য আযান ও ইকামত নেই"।

মহিলাদের জন্য আযান ও ইকামত দেওয়া এটি শরীয়তসম্মত নয়। মহিলাদের জন্য আযান ও ইকামত দেওয়া মাকরুহ। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা হতে বর্ণিত,"নামাজ আদায়ের সময় আজান ও ইকামত ছাড়াই নামাজ আদায় করতাম।"

কিন্তু আবার বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামগণ বলেছেন যে মহিলারা ইকামত দিতে পারবে। কিন্তু সেটা অন্য কোন পুরুষের কানে পৌঁছানো যাবে না। উচ্চকণ্ঠে ইকামত দেওয়া যাবে না। ঘরের মধ্যে ইকামত দিতে হবে যাতে বাহিরের কোন পুরুষের কানে সেটি না পৌঁছায়।

লেখকের শেষ কথা

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যেতে পারে, এই আর্টিকেলটি পড়ে সকলে উপকৃত হবেন৷ আমরা তখনই সার্থক হব, যখন পাঠক উপকৃত হবেন৷ পাঠকের দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের এই আয়োজন৷ আমরা আপনাদের নিমিত্বেই সর্বদায় নিয়োজিত৷

পাঠকদের লক্ষণীয় বিষয় হলো, আমাদের এই আর্টিকেলে কোন তথ্য ভুল পরী লক্ষিত হলে, আমাদেরকে অবহিত করার অনুরোধ রইলো৷ এবং এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার সুন্দর মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন৷ আপনার সুন্দর মতামত আমাদের কাম্য৷

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার লাইফ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url