তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। তাই আমরা মনে করি পাঠকের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এইগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। এটি মোটেও মিস করা ঠিক হবে না।
তরমুজের শরবত বানানোর পদ্ধতি ও এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। যারা
তরমুজের শরবত বানাতে চান। তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারে। আমরা মনে করি
এটি আপনার জন্য খুবই ভালো কাজ দিবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার বিশেষ অনুরোধ
রইলো।
পোস্ট সচিপত্র .
উপস্থাপনা
তরমুজ একটি বহুল পরিচিত গ্রীষ্মকালীন ফল। এই ফল ভালোবাসে না এমন লোক খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। তরমুজ একটি সুস্বাদু ও রসালো ফল। তরমুজের কথা শুনলে জিহ্বায় জল চলে আসে। আরো গরমকালে তরমুজ অনেক ভালো লাগে। তরমুজ আমরা গরম কালে জুস অথবা শরবত বানিয়ে পান করি। তরমুজ যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি এর গুনাগুন অনেক বেশি। নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
স্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন, তরমুজে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যেমন ম্যাগনেসিয়াম,
পটাসিয়াম, ফসফরাস, অ্যামাইনো এসিড এছাড়াও রয়েছে আরো নানান পুষ্টিগুণ। তরমুজে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি। তরমুজ সেবনে শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য
করে। গরমের দিনে তরমুজ খেলে শরীরে একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়। এজন্য শখের বসে
অনেকেই তরমুজ খেয়ে থাকেন।
তরমুজের উপকারিতা
তরমুজ শরীরের ক্লান্তি দূর করে
শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে নানান
জটিল ও কঠিন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে
নানান জটিল ও কঠিন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিষয়টা খেয়াল রেখে
প্রত্যেকের চলা উচিত। গরমের ক্লান্তি ও শরীরে পানি শূন্যতা পূরণে তরমুজের বিকল্প
নেই। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো এসিড। যা মানব দেহের জন্য খুবই
উপকারী একটি ফল।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
তরমুজের লাল অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এমাইনো
এসিড। যেটা হজম শক্তিতে বেশ কার্যকারী। নিয়মিত তরমুজ সেবন করলে পেট
পরিষ্কার ও সুস্থ থাকে। এজন্য খাদ্য অভ্যাসে তরমুজে রাখা বেস্ট হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
তরমজে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬। এগুলো মানবদেহে প্রচুর উপকারে আসে এবং রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখা খুবই জরুরী।
ওজন কমাতে
যারা ওজন বাড়া নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন ৷ তারা নিয়মিত তরমুজ
সেবন করতে পারেন ৷ তরমুজে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা মানব দেহের ওজন কমাতে বেশ
ভূমিকা পালন করে ৷ এইজন্য খাদ্য তালিকায় নিয়মিত তরমুজ রাখা খুবই জরুরী।
ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার রোধ করে
তরমুজে লাইকা নামে এক পদার্থ আসে লাল
অংশ থেকে। যার ভিতরে রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট। যেটা ডায়াবেটিস এর মত কঠিন
রোগ প্রতিরোধ করে। এবং এই ফলকে মানবদেহে ক্যান্সার রোধও দারুন কার্যকার।
এজন্য স্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন, এই ফলটি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
ত্বক নরম, মসৃণ করতে সহায়ক
তরমুজে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও
মেগোনিজ। অনেক সময় আমাদের ত্বকে ব্রণ বের হওয়ার কারণে চেহারা নষ্ট হয়ে যায়।
চেহারার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাইলে নিয়মিত তরমুজ খেতে পারেন।
কেননা মানুষের শরীরে বেশিরভাগ পানি। যখন শরীরে পানি শূন্যতা দেখা যায়। তখন শরীরে
বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ত্বক নরম, মসৃণ করতে চাইলে নিয়মিত
তরমুজ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধকারী
অনেক চিকিৎসা বিদ এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন
যে, এমন কিছু পদার্থ তরমুজের মধ্যে বিদ্যমান আছে যা মানব দেহের অত্যন্ত
উপকার সাধিত করে। এইজন্য প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখা খুবই জরুরী।
তরমুজ চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে
তরমুজের লাল অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিনয়েড। যাদের চোখের
সমস্যা বিশেষ করে চোখের ঝাপসা দেখা। দূরের জিনিস দেখতে কম পাওয়া। এবং চোখের
নানান জটিলতা নিয়ে ভুগছেন তারা তরমুজের মতো একটি ঔষধি ফল হিসেবে বেশ কিছু দিন
সেবন করতে পারেন। এতে আপনার চোখের সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে।
তরমুজ পরিমাণে বেশি খাওয়ার অপকারিতা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাবধানতা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তরমুজ
খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ তরমুজে শর্করার পরিমাণ বেশি
রয়েছে। এইজন্য এই সমস্ত রোগীদের তরমুজ কম খেতে হবে। এছাড়াও এই ফল পরিমাণ বেশি
খেলে পেটের নানান জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এ ফলে রয়েছে যথেষ্ট
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এইজন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফলটি পরিমাণে বেশি
খাওয়া উচিত হবে না।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা এই
ফলটি এড়িয়ে যাবেন। কেননা তরমুজে এমন কিছু পদার্থ রয়েছে যা এই রোগের জন্য
ভয়ংকর এর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং এই ফলটির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
অল্প মাত্রায় খেলে তেমন কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
তরমুজ পরিমাণে বেশি খেলে যা হয়
তরমুজ পরিমাণে বেশি খেলে ওভার
হাইড্রেশন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। এর
থেকে নানান জটিল ও কঠিন রোগের সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরও একটি বড় ক্ষতি
হতে পারে তাহলে এই কিডনি ফেইলোর। সুতরাং তরমুজ খাওয়ার পূর্বে ভেবেচিন্তে খাওয়াই
উচিত।
ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে
তরমুজ এমন একটি ফল যা অল্প
মাত্রায় খেলে উপকার মিলবে আর বেশি পরিমাণে খেলে হতে পারে শরীরে নানান রোগের
বাসা। যেমন হজমে সমস্যা, ফুড পয়জনিং, আলচার এবং ডায়রিয়া সহ পেটের আরো নানান
সমস্যা। তাই এই ফল পরিমাণে বেশি খাওয়া ঠিক নয়। এই জন্য তরমুজ খাওয়ার ব্যাপারে
সাবধানতা অবলম্বন করলে উপরোক্ত জটিল ও কঠিন রোগ থেকে রেহাই মিলবে।
গর্ভবতী নারী অধিক খাওয়া থেকে একটু সাবধান
তরমুজ একটি রসালো ফল। এই
ফল মানব দেহের পানি শূন্যতা পূরণ করে শরীর রাখে সুস্থ। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য
অধিকাংশ ডাক্তারের পরামর্শ, বেশি করে পানি পান করতে হবে। তাই তরমুজ খেলেও শরীরের
পানি শূন্যতা পূরণ করে। এবং তরমুজের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। সবই
ঠিক আছে, কিন্তু গর্ভবতী মহিলাদের জন্য তরমুজ অধিক পরিমাণে খাওয়া ঠিক হবে না।
তরমুজের শরবত তৈরীর পদ্ধতি
এই গরমে শরবত কে না ভালোবাসে। আর সেটা যদি হয় তরমুজের, তাহলে তো জিহ্বায় জল
চলে আসে। এই গরমে শরবত সেবনে সকল ক্লান্তি দূর করে শরীর করে প্রশান্তি ময়।
নিম্নে তরমুজের শরবত তৈরীর উপকরণ সম্পর্কে একটি তালিকা প্রদান করা হলো।
তরমুজের শরবত তৈরীর উপকরণ
উপকরণ: প্রথমে পরিমাণ মতো তরমুজের
টুকরা, বরফের টুকরা, স্বাদ অনুযায়ী চিনি, লেবুর রস, স্বাদ অনুযায়ী বিট
লবণ, গোল মরিচের গুঁড়া, দারুচিনির গুঁড়া, পুদিনা পাতার টুকরা, দুধ/দই এক কাপ
পরিমাণ, এক টেবিল পরিমাণ মধু ইত্যাদি উপকরণ একসাথে বেলেন্ট করে পরিবেশন করতে
পারবেন। আর এটি হবে একটি স্বাস্থ্যকর খাবার।
তরমুজের রেসেপি
প্রথমে তরমুজ সাইজ মত পিচ পিচ করে কেটে নিতে হবে। হালকা করে পেয়াজ, মরিচ এবং প্রয়োজন অনুসারে মসলাপাতি দিয়ে নিতে হবে। পিয়াজ মরিচ গরম কোরায়তে দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিতে হবে। তারপর তরমুজের টুকরা ও প্রয়োজন মত মসলা পাতি দিতে হবে। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে স্বাদ অনুযায়ী লবন দিতে হয়। সিদ্ধ করার পর হালকা ঝোল রেখে তারপর এটি পরিবেশন করা যেতে পারে।মন্তব্য
পরিশেষে বলা যেতে পারে, তরমুজ আমরা সাবধানতার সাথে ভক্ষণ করব। কেননা এই ফল যেমন উপকার তেমনি তার অপকারও রয়েছে। সুতরাং এই ফলটা খাওয়ার পূর্বে ভেবেচিন্তে খাওয়াই উত্তম। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ রইলো এই ফল বেশি খাওয়া উচিত হবে না। অল্পমাত্রাই খেলে সেটি ঔষধ হিসেবে গণ্য হবে।
আমাদের এই লেখার মধ্যে কোন ভুল ভ্রান্তি হলে অবশ্যই আমাদেরকে অবহিত করবেন। আমরা
পরবর্তীতে তার সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
ফিউচার লাইফ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url