কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন
কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন এই ব্লগটি আপনাদের জন্য প্রকাশিত হতে চলেছে। তাই এই
আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
কমলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কেও আমরা এই ব্লগে আলোচনা করব। আগ্রহী ব্যক্তিরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন।
পোস্ট সূচিপত্র.
কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন
ব্রণের সমস্যায়: ব্রণের সমস্যায় প্রথমে এক চা চামচ পরিমাণ কমলার খোসা
বাটা, এক চা চামচ শঙ্ক গুড়া, এবং এক চা চামচ পুদিনা পাতার রস। এই তিন উপকরণ
একসাথে মিক্সড করে সমস্ত মুখে প্রলেপ দিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ১ থেকে দেড় সপ্তাহ মুখে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা দূর
হতে পারে।
মুখে বয়সের ছাপ এবং বলিরেখা দূর করতে: প্রথমে এক চা চামচ পরিমাণ কমলার
খোসা বাটা, এবং এক চা চামচ পরিমাণ কমলার রস, এবং ২/৩ টি কাঠবাদাম পেস্ট। এ
কয়েকটি উপকরণ একসাথে মিক্সড করে মুখে ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে: প্রথমে এক চা চামচ পরিমাণ কমলার খোসা বাটা,
সমপরিমাণ গাভীর কাঁচা খাঁটি দুধ, হালকা চন্দন কাঠের গুড়া, এবং পরিমাণ মতো লেবুর
রস, এ কয়েকটি উপকরণ একসাথে মিক্সড করে মুখে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল ও
মসৃণ হবে।
ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে: প্রথমে এক চা চামচ পরিমাণ কমলার খোসা বাটা,
এবং এর সাথে এক চা চামচ পরিমাণ এলোভেরা জেল। এই দুই উপকরণ ভালোভাবে মিক্সচার করে
পেস্ট তৈরি করতে হবে। এটি সমস্ত মুখে ব্যবহার করতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট
পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হতে পারে।
কালো দাগ দূর করে: কমলার খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক ভিটামিন সি, যা ত্বকের জন্য দারুন উপকারি। কমলার খোসা বাটা এবং তার সাথে অলিভ অয়েল মিক্সাচার করে কয়েকদিন ব্যবহার করলে ত্বকের ভালো উপকার পাওয়া যায়।
ঘরোয়া ফেসপ্যাক: প্রথমে কমলার খোসা বাটা, টক দই, মধু, কাঁচা হলুদের গুড়ো,
খাঁটি গাভীর কাঁচা দুধ ইত্যাদি। এ কয়েকটি উপকরণ একসাথে মিক্সড করে একটি ফেসপ্যাক
তৈরি করুন। এটি মুখে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ত্বকে দিয়ে ওয়েট করুন। তারপর ধুয়ে
ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল এবং সুন্দর হবে।
কমলার খোসার উপকারিতা
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: কমলার খোসাতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক ফাইবার এবং ভিটামিন সি, যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ভালো কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে কমলার খোসা নিয়মিত খেতে পারেন। এতে ভালো উপকার রয়েছে।
পেটের এসিডিটি দূর করে: কমলার খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি
ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের উপাদান। তৈলাক্ত খাবার গ্রহণ করার পর
কমলার খোসা সেবন করলে পেটে এসিডিটির ভাব কমে যায়। তাই তৈলাক্ত খাবারের জন্য এটি
একটি বেস্ট অপশন হতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: কমলার খোসাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, যা হজম
শক্তি উন্নত করে। এটি মানব দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এবং এটির
মেটাবলিজম দ্রুত বৃদ্ধি করে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: কমলার খসাতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট, যা নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
করে। তাই খাদ্য তালিকায় কমলার খোসা রাখা যেতে পারে।
কমলার খোসার চা বানাতে পারেন: প্রথমে কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এক চা চামচ পরিমাণ হালকা পানিতে ফুটিয়ে নিন। এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য হালকা মধু যুক্ত করতে পারেন। এই চা গরম গরম পরিবেশন করলে অনেক ভালো লাগে।
কমলার খোসার ফেসপ্যাক
(১) কমলার খোসা বাটা, কাঁচা হলুদ এবং নারিকেলের তেল
এক চা চামচ
পরিমাণ কমলার খোসা বাটা, এক চা চামচ পরিমাণ নারিকেলের তেল এবং সামান্য পরিমাণে
কাঁচা হলুদ বাটা। এই তিনটি উপকরণ একসাথে পেস্ট তৈরি করতে হয়। এটি মুখে ব্যবহার
করতে পারেন। এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
(২) কমলার খোসা বাটা এবং গোলাপ জলের ব্যবহার
এক চা চামচ পরিমাণ কমলার
খোসা বাটাতে সামান্য পরিমাণে গোলাপজল দিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই
পেস্টটি সমস্ত মুখে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হালকা কুসুম
গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে অন্তত দুইবার ব্যবহার করলে ত্বক
উজ্জল ও মসৃণ হবে।
(৩) কমলার খোসা বাটা এবং ডিম
এক চা চামচ কমলার খোসা বাটা এবং তার
সাথে ডিমের কুসুম বাদে সাদা অংশ দিয়ে ভালো ভাবে মিক্সচার করতে হবে। তারপর এই
ফেসপ্যাকটি মুখের ত্বকে সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক
সুন্দর ও উজ্জ্বল করে তুলে।
(৪) কমলার খোসা, টক দই, মধু, কাঁচা হলুদ
কমলার খোসা বাটা এক চা চামচ,
টক দই ২ চা চামচ, মধু এক চা চামচ, সামান্য কাঁচা হলুদের গুড়া। এই উপকরণগুলো
ভালোভাবে মিক্সড করে মুখের ত্বকে ব্যবহার করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে
হবে। এতে ত্বক ক্লিনজার, উজ্জ্বল এবং মসৃণ দেখাবে।
(৫) কমলার খোসা, একটি ছোট শসা, সমান্য মধু
একটি কমলার খোসা এবং একটি
ছোট শসা ভালো করে ব্লেন্ডার করে নিতে হবে। এবং এই মিশ্রনের সাথে সামান্য পরিমাণে
মধু যুক্ত করে ভালোভাবে মিক্সড করতে হবে। এই ফেসপ্যাকটি মুখের ত্বকে লাগিয়ে ১০
থেকে ১৫ মিনিট ওয়েট করতে হবে। এবং তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
কমলার খোসা দিয়ে চুলের যত্ন
১/ চুল ঘন ও খুশকি মুক্ত করে: প্রথমে কমলার খোসা একটি পাত্রে হালকা পানি
দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। তারপর সারারাত ওই পাত্রেই রেখে দিন। এবং সকালবেলা
কমলার খোসাতে ভেজানো পানি মাথার চুল এবং চুলের গোড়াতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এতে
চুল ঘন এবং খুশকি মুক্ত হবে।
২/ চুল সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে: প্রথমে কিছু কমলার খোসা বেটে নিতে হবে এবং
তার সাথে নারিকেলের দুধ অথবা তেল দিয়ে ভালো ভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্ট
চুলের গোড়ায় গোড়ায় এবং চুলে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তারপর ২০ মিনিট পর তা পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৩/ হেয়ার প্যাক: প্রথমে কমলার খোসা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো এক চা চামচ কমলার খোসা ভালোভাবে গুড়ো করে নিতে হবে। তার সাথে এক চা চামচ নারিকেলের তেল যুক্ত করতে হবে। এবং ২ থেকে ৩ চা চামচ পরিমাণ নারিকেলের দুধ দিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন। এটি নিয়মিত চলে ব্যবহার করতে পারেন।
কমলার রস দিয়ে রূপচর্চা
কমলার রসের ফেসপ্যাক তৈরি
কমলার রস ২ চা চামচ পরিমাণ, কমলার খোসার
গুড়া, টক দই এক চা চামচ পরিমাণ একসাথে মিশিয়ে কয়েকদিন ত্বকে ব্যবহার করলে তখন
উজ্জ্বল এবং সুন্দর হয়।
কমলালেবুর রস মুখে মাখলে কি হয় ?
কমলালেবুর রস মুখে মাখলে মুখ পরিষ্কার ও উজ্জ্বল হয়। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ত্বকের জন্য দারুন উপকারি। এই রস মুখে মাখলে দ্রুত ত্বকের
কোষ সচল হয়ে যায়। এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজ কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন ব্লগটি লেখার চেষ্টা করেছি। এটি পাঠ করলে অনেক উপকৃত হবেন। আশা করছি বন্ধুদের সাথে এই ব্লগটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য। ‘‘ধন্যবাদ”
ফিউচার লাইফ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url